Ticker

6/recent/ticker-posts

ইন্ট্রোডাকশনের আদ্যপান্ত-১ । How to Write Research Paper Introduction - 1



গবেষনায় যারা নতুন তাদের জন্য ইন্ট্রোডাকশন লেখাটা একটু কঠিন। আসলে যতটা না লেখা কঠিন, তার থেকে বেশি কঠিন সেটা বুঝে ওঠা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইন্ট্রোডাকশন লেখার আগে সেটা বুঝে ওঠার চেষ্টা করবো।  

ইন্ট্রোডাকশন কি । What is Introduction

ইন্ট্রোডাকশন হচ্ছে দ্যা প্রসেস অফ ইন্ট্রোডিউসিং সামথিং। অর্থাৎ কোন কিছুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। এমন কি হতে পারে না যে একজন রিডার, যে কিনা / যিনি আপনার গবেষণাপত্রটি  পড়বেন সে / উনি গবেষণাপত্রের বিষয়ে অজ্ঞ? এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

ইন্ট্রোডাকশন মুলত এই কারনেই লেখা হয়ে থাকে। অর্থাৎ রিডারকে আপনার গবেষণার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছুটা ধারনা দেয়াই থাকে এর মূল উদ্দেশ্য। হ্যাঁ কিছুটা ধারনা এই কারনে বললাম, কারন এমন হতে পারে যে আপনার গবেষণার বিষয়ে ডজন খানিক বই লিখে ফেলা সম্ভব। ঠিক এই কারণে “কিছুটা” শব্দটা ব্যবহার করা।

মূলত, ইন্ট্রোডাকশন লেখার তেমন কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। তবে বেশির ভাগ গবেষক একটা নির্দিষ্ট স্টাইল বা ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে থাকেন। আসল কথা হচ্ছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে আপনার গবেষনার গুরুত্ব তুলে ধরাই এই অংশের কাজ। আমরা যারা নতুন গবেষণা শিখবো তারাই প্রথম দিকে এই ধারাবাহিকতা অনুসরণ করবো।

ইন্ট্রোডাকশোনে মূলত নিচের কয়েকটা অংশ রাখা হয়ঃ

১। গ্লোবাল কনসিডারেশনে/ বিশ্বব্যাপী বিবেচনায় আপনার বিষয়বস্তুর বর্তমান অবস্থা কি?

২। আপনি যদি বাংলাদেশি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার দেশের প্রেক্ষিতে আপনার বিষয়বস্তুর অবস্থা এবং গুরুত্ব কেমন।

৩। যে নির্দিষ্ট যায়গায় গবেষণা করবেন (জেলা, উপজেলা বা কয়েকটা জেলা, উপজেলা) সেই জায়গার প্রেক্ষিতে আপনার বিষয়বস্তু কেন গুরুত্বপুর্ন সেটা তুলে ধরবেন।

৪। ঐ নির্দিষ্ট বিষয়ের উপরে এর আগে আপনার দেশে বা অন্য কোন দেশে গবেষণা হয়ে থাকলে তার কিছু ফলাফল উপস্থাপন করা (রিভিউ অফ লেটারেচার না দিলে)।

৫। আপনি কি করতে চান ও কেন সেটা গুরুত্বপূর্ন।

৬। আপনার রিসার্স অবজেক্টিভ

এবার একটু বিস্তারিত ভাবে লিখি- 

এর আগেই বলেছি যে এই অংশটাতে আপনার রিডারকে বোঝাতে হবে আপনার গবেষণার বিষয়বস্তুটা আসলেই কি এবং আপনি যে জায়াগায় গবেষণা করতে চাচ্ছেন, সেখানেই করাটা কেন গুরুত্বপূর্ন সেটা উল্লেখ করতে হবে।

ধরে নিচ্ছি, আপনি আপনার নিজ উপজেলার কৃষকদের উপর একটি গবেষণা করতে চাচ্ছেন। গবেষণার বিষয়টি অনেকটা এরকম যে,

আবহাওয়া পরিবর্তন সম্পর্কে কিশোরগঞ্জের সবজি চাষীদের ধারণা এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য তারা কি ধরনের অভিযোজন কৌশল গ্রহন করেন

ইন্ট্রোডাকশানটা মূলত একটি ফানেলের মত হবে। অর্থাৎ অনেক বড় যায়গা থেকে শুরু হয়ে একটা নির্দিষ্ট ও ছোট যায়গায় এসে থামবে।

তাহলে ইন্ট্রোডাকশনটা আপনি কিভাবে সাজাবেন?

প্রথমে আপনি লিখতে পারেন পৃথিবীব্যাপি আবহাওয়া পরিবর্তন সম্পর্কে সবার ধারনা কেমন আবহাওয়া পরিবর্তন কি ধরনের ক্ষতি করছে সবার স্পেশালি কৃষিতে? কৃষিতে বলার কারণ হচ্ছে আপনার গবেষণার বিষয়বস্তু কিন্তু সবজিচাষীদের উপরে। প্রথম দিকে এরকম কয়েকটা লাইন উল্লেখ করতে পারেন। এর পরে আপনি সাউথ এশিয়ার প্রেক্ষিতে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে কৃষিতে কি ধরনের অসুবিধা হচ্ছে সেরকম কিছু তথ্য উপাত্ত উল্লেখ করতে পারেন (অবশ্যই ঠিকঠাক সাইটেশন দিয়ে)।

Want to be a successful freelancer?

এই অংশ শেষ করে আপনি চলে আসবেন আপনার নিজ দেশে। সেখানেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য উপাত্ত উল্লেখ করতে পারেন বা করবেন।

এখানে তিনটা জায়গা কভার করা হলো। 

এখন আপনি উল্লেখ করতে পারেন যে কেন কৃষকদের আবহাওয়া সম্পর্কিত ধারনা ও অভিযোজন কৌশল সম্পর্কে গবেষণা করা দরকার এবং শেষমেষ আপনি যে জায়গায় গবেষণা করবেন সেই যায়গাটাই কেন? সেই সম্পর্কে লিখবেন। তবে, যদি আপনার এলাকাতে এই সম্পর্কিত আগে কোন গবেষণা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে একটু অন্যভাবে বা কৃষক বা সবজিচাষী বাদে চিন্তা করতে হবে। কিভাবে করবেন সেটা অন্য কোন সময় আলোচনা করা যাবে।

খুব নির্দিষ্ট ও ধারাবাহিক ভাবে যদি বলা হয় তাহলে নিচের তিনটি ধাপ ফলো করতে পারেন।

প্রথম অংশে, আপনি নিচের তিনটি বিষয়ের যে কোন একটা দিয়ে শুরু করতে পারেনঃ

১। আপনার গবেষণার বিষয়বস্তুর গুরুত্ব উল্লেখ করতে পারেন, এবং/অথবা

২। ঐ বিষয়বস্তুর উপরে একটা সাধারণ স্টেটমেন্ট দিতে পারেন, এবং/অথবা

৩। বিষয়বস্তুর বর্তমান অবস্থার একটা অভারভিউ দিয়ে শুরু করতে পারেন।

দ্বিতীয় অংশে,

১। এক্সিসটিং (Existing) কোন এজাম্পশনের (Assumption) বিরোধীতে করতে পারেন, এবং/অথবা

২। অন্য গবেষণার গ্যাপ (Research Gap) [1] তুলে ধরতে পারেন, এবং/অথবা

৩। একটা রিসার্স কোশ্চেন [2] দাড় করাতে পারেন।

তৃতীয় অংশে,

১। আপনার গবেষণার উদ্দেশ্য (Research Objectives) কি সেটা লিখতে পারেন, এবং/অথবা

২। আপনার গবেষণার বিষয়বস্তুর মূল বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে পারেন, এবং/অথবা

৩। কিছু গুরুত্বপুর্ন ফলাফল নিয়ে আসতে পারেন যেটা অন্য গবেষকেরা আগেই বলছে, এবং/অথবা

৪। আপনার পুরো পেপারের একটি ওভারভিউ দিতে পারেন।

আসল কথা হচ্ছে ইন্ট্রোডাকশন হলো আপনার গবেষণাপত্র যে পড়বে তাকে প্রভাবিত করার বা গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরার জায়গা। সুতরাং সেটা করার জন্য যা যা লাগবে তাই  করবেন।

নতুনদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে আপনি আপনার গবেষণার বিষয়বস্তু সম্পর্কিত কয়েকটা গবেষণাপত্র নিয়ে বসেন। বের করার চেষ্টা করেন যে আসলে তারা তাদের গবেষণাপত্রে কোন কোন ধাপ ফলো করছে। কিভাবে শুরু করলো? এর পরে কোন কোন অংশ নিয়ে আসলো? কেন আসলো? এবং লেখাটা শেষ করলো কিভাবে? 

এই ধাপগুলো ফলো করলেই আপনি লেখা শুরু বিষয়ে আইডিয়া করতে পারবেন। শুরুর আগে মনে মনে বা কাগজে কলমে লিখে ডিজাইন করে নিন যে আপনি কি কি অংশ রাখবেন আপনার ইন্ট্রোতে, কোনটার পরে কোনটা সেই ধাপগুলো ঠিক করে নিন। এর পরে শুরু করুন।

ইন্ট্রোডাকশন কিভাবে লিখতে হয় এর দ্বিতীয় অংশে আমরা একটা গবেষণাপত্র নিয়ে সেটা কাটা ছেড়া পদ্ধতিতে আলোচনা হয়েছে। আমরা সেখানে জানার চেষ্টা করেছি কেন এবং কিভাবে গবেষকগণ তাদের ইন্ট্রোডাকশন লিখলেন। 

ইন্ট্রোডাকশনের আদ্যপান্ত-২ । How to Write Research Paper Introduction- 2

 

Post a Comment

2 Comments